ইলেকট্রনিক কম্পিউটার

- তথ্য প্রযুক্তি - কম্পিউটার (Computer) | NCTB BOOK
1k
Summary

ইলেকট্রনিক কম্পিউটার হলো একটি ডিজিটাল ডিভাইস যা দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে গাণিতিক ও যৌক্তিক কাজ সম্পাদন করে। এটি আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির মূল ভিত্তি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।

ইতিহাস:

  • ENIAC: ১৯৪৬ সালে তৈরি প্রথম সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক কম্পিউটার, যা ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করে গাণিতিক হিসাব সম্পন্ন করত।
  • UNIVAC: ১৯৫১ সালে প্রথম বাণিজ্যিক কম্পিউটার, যা ডেটা প্রক্রিয়াকরণে ম্যাগনেটিক টেপ ব্যবহার করে।

প্রকারভেদ:

  • মেইনফ্রেম কম্পিউটার: শক্তিশালী এবং বৃহৎ ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত।
  • মিনিকম্পিউটার: মাঝারি মাপের, সহজলভ্য এবং বহনযোগ্য।
  • মাইক্রোকম্পিউটার: পার্সোনাল কম্পিউটার (PC) হিসেবে পরিচিত।

গঠন:

  • সিপিইউ: কম্পিউটারের মস্তিষ্ক, ইনপুট ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে।
  • মেমোরি: RAM এবং ROM তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত।
  • ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস: তথ্য প্রবেশ ও প্রদর্শন করে।
  • স্টোরেজ ডিভাইস: দীর্ঘমেয়াদী তথ্য সংরক্ষণে সাহায্য করে।

গুরুত্ব:

  • দ্রুত ডেটা প্রক্রিয়াকরণ।
  • স্বয়ংক্রিয়তা এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি।
  • বিশ্বব্যাপী তথ্য বিনিময়।
  • বহুমুখী ব্যবহার।

প্রভাব: ইলেকট্রনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বিপ্লবী পরিবর্তন এনেছে এবং আধুনিক সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

ইলেকট্রনিক কম্পিউটার হলো একটি ডিজিটাল ডিভাইস যা ইলেকট্রনিক সার্কিট এবং উপাদান ব্যবহার করে দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে গাণিতিক ও যৌক্তিক কাজ সম্পাদন করে। এটি আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির মূল ভিত্তি এবং ডিজিটাল যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন। ইলেকট্রনিক কম্পিউটার বর্তমান বিশ্বের ব্যবসা, শিক্ষা, বিজ্ঞান, বিনোদনসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছে।

ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের ইতিহাস:

ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের বিকাশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক রয়েছে:

১. ENIAC (Electronic Numerical Integrator and Computer):

  • ১৯৪৬ সালে জোহান মক্লি (John Mauchly) এবং জে. প্রেসপার একার্ট (J. Presper Eckert) দ্বারা উদ্ভাবিত ENIAC প্রথম সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক কম্পিউটার।
  • এটি একটি বিশাল আকারের মেশিন ছিল যা ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করত এবং গাণিতিক হিসাব করতে সক্ষম ছিল। ENIAC-এর সাহায্যে জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান অনেক দ্রুত সম্ভব হয়েছিল, যা আগে ম্যানুয়ালি করা হতো।
  • ENIAC-এর সাইজ ছিল বিশাল এবং এটি চালাতে প্রচুর বিদ্যুৎ প্রয়োজন হতো।

২. UNIVAC (Universal Automatic Computer):

  • ১৯৫১ সালে Eckert এবং Mauchly-এর প্রতিষ্ঠান Sperry Corporation UNIVAC তৈরি করে, যা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা প্রথম কম্পিউটার।
  • UNIVAC ডেটা প্রক্রিয়াকরণ এবং তথ্য সংরক্ষণের জন্য ম্যাগনেটিক টেপ ব্যবহার করত, যা কম্পিউটারের গতি এবং ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
  • এটি কম্পিউটারের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা প্রকাশ করে এবং বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও সরকারী সংস্থার মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের প্রকারভেদ:

ইলেকট্রনিক কম্পিউটার কয়েকটি প্রকারভেদে বিভক্ত, যেমন:

১. মেইনফ্রেম কম্পিউটার:

  • মেইনফ্রেম হলো শক্তিশালী কম্পিউটার, যা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রচুর ডেটা প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিচালনার কাজ করে।
  • এগুলি সাধারণত ব্যাঙ্কিং, সরকারী সংস্থা, এবং কর্পোরেট ডেটা সেন্টারে ব্যবহৃত হয়।

২. মিনিকম্পিউটার:

  • মিনিকম্পিউটার হলো মাঝারি মাপের কম্পিউটার, যা কিছুটা কম ক্ষমতাসম্পন্ন কিন্তু সহজলভ্য এবং বহনযোগ্য।
  • এটি সাধারণত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং ছোট সংস্থার মধ্যে ব্যবহৃত হয়।

৩. মাইক্রোকম্পিউটার:

  • মাইক্রোকম্পিউটার হলো সাধারণভাবে পার্সোনাল কম্পিউটার (PC) হিসেবে পরিচিত।
  • এটি ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তা আজও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, এবং ট্যাবলেট।

ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের গঠন:

ইলেকট্রনিক কম্পিউটার কয়েকটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত:

১. সিপিইউ (Central Processing Unit):

  • এটি কম্পিউটারের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে। সিপিইউ ইনপুট ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে আউটপুট তৈরি করে।
  • সিপিইউ-এর দুটি প্রধান অংশ: ALU (Arithmetic Logic Unit) এবং CU (Control Unit)।

২. মেমোরি (Memory):

  • র‍্যাম (RAM) এবং রম (ROM) কম্পিউটারের তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • র‍্যাম হলো অস্থায়ী মেমোরি যেখানে কাজের সময় তথ্য সংরক্ষিত হয়, এবং রম হলো স্থায়ী মেমোরি যেখানে অপারেটিং সিস্টেম এবং বেসিক প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করা হয়।

৩. ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস:

  • ইনপুট ডিভাইস যেমন কীবোর্ড, মাউস এবং স্ক্যানার ব্যবহারকারীর ডেটা কম্পিউটারে প্রবেশ করায়।
  • আউটপুট ডিভাইস যেমন মনিটর এবং প্রিন্টার প্রক্রিয়াকৃত তথ্য প্রদর্শন করে।

৪. স্টোরেজ ডিভাইস:

  • হার্ড ড্রাইভ (HDD), সলিড-স্টেট ড্রাইভ (SSD), এবং ফ্ল্যাশ ড্রাইভের মতো ডিভাইস তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • এগুলি দীর্ঘমেয়াদী তথ্য সংরক্ষণে সাহায্য করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য মেমোরিতে ডেটা লোড করে।

ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের গুরুত্ব:

  • গতি এবং ক্ষমতা: ইলেকট্রনিক কম্পিউটার খুব দ্রুত ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করতে সক্ষম, যা ম্যানুয়াল গণনার তুলনায় অনেক দ্রুত।
  • অটোমেশন: ইলেকট্রনিক কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রোগ্রাম চালাতে পারে এবং কাজ সম্পন্ন করতে পারে, যা দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
  • সংযোগ এবং যোগাযোগ: ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী তথ্য বিনিময় এবং যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে।
  • বহুমুখিতা: বিজ্ঞান, শিক্ষা, ব্যবসা, বিনোদন, স্বাস্থ্যসেবা, এবং গবেষণাসহ প্রায় সবক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের ব্যবহার রয়েছে।

ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের প্রভাব:

ইলেকট্রনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বিপ্লবী পরিবর্তন এনেছে। এটি আধুনিক সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর বিকাশ তথ্য প্রযুক্তি, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), এবং আরও অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করেছে।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...